সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে চাকরি প্রার্থীদের একাংশ অনেক ধরেই বিভিন্ন দাবি ও আন্দোলন করে আসছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই দাবি আবার জোরালো হচ্ছে।
বয়সের সীমা কত হওয়া উচিৎ, এই বিতর্কের শেষ নেই। যারা বয়স ৩৫ চান, তাদের যুক্তি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে সার্টিফিকেট অর্জন করে সেই সার্টিফিকেটের একটা মেয়াদ কেন থাকবে? মোটা দাগে এই যুক্তি খুবই সুন্দর।
এটা নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টানছেন। অনেক দেশে বয়সসীমা ৩৫-৪০। আবার অনেক দেশে কোন সীমাই নেই। আমাদের দেশের সরকারি চাকরির মূল লোভনীয় জায়গাটা হচ্ছে চাকরি শেষে পেনশন, দূর্নীতি ও নিরাপত্তা।
যেসব দেশের উদাহরণ আমরা টানছি, সেসব দেশে এই সুবিধাগুলো সেভাবে নেই। অন্যদেশের সাথে তুলনা হতেই পারে, কিন্তু প্রেক্ষাপট তো একটু মিলিয়ে দেখতে হবে। এদেশে সরকারি চাকরি বয়সসীমা বাড়ালে সরকারি চাকরি আরও অভাররেটেড হবে। ফলে বেকারত্ব, হতাশা আরও বাড়বে। হয়তো সাময়িক ভাবে কিছু চাকরি প্রত্যাশিরা উপকৃত হবেন।
সরকারি চাকরিজীবীরা যদি দূর্নীতি করার সুযোগ না পায়, আগামী ১০ বছরের মধ্যে সরকারি চাকরির প্রতি এই মোহ আর থাকবে না। বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবী(১১ গ্রেড – ২০গ্রেড) যে বেতন পায়, তা দিয়ে সরকার চালানো আসলে দূরুহ ব্যাপার। সুতরাং, উপরি কামাই না থাকলে এই লেভেলের চাকরির আকাঙ্খা অনেক কমে যাবে।
একটা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের মূল খাত বেসরকারি খাত। সরকারি চাকরি তে যদি দীর্ঘ বয়সসীমা থাকবে থাকে তবে উদ্যোক্তা, নতুন ব্যবসায়ী ইত্যাদি কম সৃষ্টি হবে।
আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা কোন ভাবেই ৩৫ হওয়া উচিত না। তবে করোনা পরবর্তী প্রকোপ কাটাতে ৫ -৭ বছরের জন্যে ৩২ করা যেতে পারে।