নতুন দিনের শুরু

প্রত্যেকটা দিনই স্বতন্ত্র। প্রত্যেকটা দিনই নতুন। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, এই বঙ্গের মানুষের জন্য এ এক অন্য রকম নতুন দিনের শুরু।

বাংলাদেশের বয়স পঞ্চাশ হয়ে একান্নতে পা দিয়েছে। অর্থাৎ, অর্ধ শতাব্দী সে পার করে ফেলেছে। অনেক চড়াই উৎরাই পার করে বাংলাদেশ আজকের এই অবস্থানে।

বাংলাদেশের নান রকমের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। অবকাঠামোর মধ্যে সড়ক পথ একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আর সেই সড়ককে সংযোগ ঘটাতে প্রয়োজন সেতু।

এই পঞ্চাশ বছরে আমরা বহু সেতু নির্মাণ করেছি। সেতু গুলো ছিলো অপেক্ষাকৃত কম চওড়া ও কম খরস্রোতা নদীর উপর তৈরি ।

আমাদের বড় নদী গুলো জয় করা বড় মানের সেতু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু, যেটা যমুনা নদীর উপর অবস্থিত। বঙ্গবন্ধু সেতুর ফলে উত্তরবঙ্গের মানুষের যোগাযোগ সহজ হয় রাজধানীর সাথে।

বাকি পড়ে প্রমত্তা পদ্মাকে জয় করার। কিন্তু এই তীব্র খরস্রোতা নদীকে জয় করা তো আর মুখের কথা না। খরস্রোতা নদীর দিক দিয়ে পদ্মার অবস্থান আমাজন নদীর পরেই।

পদ্মা জয় করার সেই স্বপ্ন লালন কর‍তে গিয়ে বাধা আসলো অনেক। প্রথমে বিশ্বব্যাংক সহ অন্যান্য বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দিতে চেয়েছিল। দুর্নীতির অভিযোগে যে ঋণ বাতিল হয়ে যায়।

বৈদেশিক ঋণ ছাড়া পদ্মা সেতু করা ছিল আমাদের মত নিম্ন অর্থনীতির দেশে প্রায় অসম্ভব। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সে স্বপ্ন একটু শক্ত ভাবেই দেখেছিলেন বলেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, ”নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হবে।”

অবশেষে পদ্মা সেতু আলোর মুখ দেখলো। ২৫ জুন,২০২২ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করলেন গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের জন্য এক নতুন দুয়ার উন্মোচন হল। হল নতুন দিনের শুরু।

নতুন দিনের শুরু
পদ্মা সেতু

রাজধানীর সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ টি জেলা। এই ২১টি জেলার ভিতর রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলাও।

পদ্মা সেতু তৈরিতে যে বিশেষজ্ঞ প্যানেল ছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। যিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, এই পদ্মা সেতু পূর্ণতা পাবার আগেই তিনি ইহলোক ছেড়ে চলে গেছেন। আল্লাহ উনাকে মাফ করেন। আমিন।

পদ্মা সেতু হওয়াতে অন্যতম উপকার হবে দক্ষিণ অঞ্চলের বিভাগীয় শহর আমাদের খুলনার। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক এখনও চার লেনের হয়নি। পদ্মা সেতু হওয়াতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যাবে। ফলে, দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। তাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক যদি চার লেনের করা যায়, তাহলে হয়তো দূর্ঘটনা ঘটার হার টা হয়তো কমে যাবে।

পদ্মা সেতুর হাত ধরেই এগিয়ে যাক ভবিষ্যৎ এক মানবিক অর্থনৈতিক শক্তিশালী বাংলাদেশ। হোক নতুন দিনের শুরু।

আরও পড়ুন

Leave a Reply